ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হিসেবে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে অনেকেই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করেন। এই বিদ্রোহকে 'প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ' বলে অভিহিত করেছিলেন ভি. ডি. সাভারকর। এই বিদ্রোহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে। ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র 'মঙ্গল পাণ্ডে' এই ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল রাজনৈতিক কার্যকলাপ। ১৯২৯ সালের লাহোর অধিবেশনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস 'পূর্ণ স্বরাজ' বা সম্পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষ্য ঘোষণা করে। এই অধিবেশনে কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে জওহরলাল নেহরু সম্পূর্ণ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। এই ঘোষণার ফলস্বরূপ, ১৯৩০ সালের ২৬শে জানুয়ারি তারিখটিকে প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়েছিল। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে স্বাধীনতার পর ২৬শে জানুয়ারি তারিখেই ভারতের সংবিধান কার্যকর করা হয়।
গান্ধীজি তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে খাদিকে 'অর্থনৈতিক স্বাধীনতা'র প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। স্বদেশী আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক নতুন গতি এনেছিল, এবং স্বাধীনতার পর এটি ভারতের সুতির টেক্সটাইল শিল্পে বড়ো উৎসাহ জোগায়।
স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকাটি নকশা করেছিলেন পিঙ্গলি ভেঙ্কাইয়া। এই পতাকার প্রথম রূপটি ৭ আগস্ট, ১৯০৬ সালে উত্তোলন করা হয়েছিল।
ভারতের বাইরেও স্বাধীনতা আন্দোলন সক্রিয় ছিল। ১৯৪২ সালে, ভারতের বাইরে প্রথম স্বাধীন ভারতীয় সেনা বা 'আজাদ হিন্দ ফৌজ' গঠন করেছিলেন রশবিহারী বসু। তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা লীগও গঠন করেছিলেন)। সুভাষচন্দ্র বসু পরবর্তীকালে এই বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। এই বাহিনী ১৪ এপ্রিল, ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশদের পরাজিত করে মইরাং-এ ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিল।
১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাস হয়। এই আইনটি লন্ডনের হাউস অব কমন্সে প্রথম পেশ করা হয়েছিল ১৪ জুলাই, ১৯৪৭ সালে। এর ফলস্বরূপ, ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ সালে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করে।
ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ক্লেমেন্ট অ্যাটলি। স্বাধীনতার সময় ভারতের ভাইসরয় ছিলেন মাউন্টব্যাটেন। তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেলও হয়েছিলেন।
স্বাধীনতা লাভের পর দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতীয় ইউনিয়নে একীভূত করার এক বিশাল দায়িত্ব এসে পড়ে। এই কঠিন কাজের জন্য দায়ী ছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। তবে কিছু রাজ্য সহজে ভারতীয় ইউনিয়নে যুক্ত হতে চায়নি। উদাহরণস্বরূপ, হায়দ্রাবাদ রাজ্যটি স্বাধীনতার পর ভারতীয় ইউনিয়নে যুক্ত হয়নি। ভারত সরকার সামরিক অভিযানের মাধ্যমে হায়দ্রাবাদ রাজ্যকে নিজেদের অধিকারে নেয়।
স্বাধীন ভারতের প্রথম মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রী ছিলেন ড. বি. আর. আম্বেদকর। তাঁর মাধ্যমে ব্যাপক ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটেছিল। স্বাধীন ভারতের প্রথম ভারতীয় গভর্নর জেনারেল ছিলেন সি. রাজাগোপালাচারি।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ড. প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ। প্রথম মহিলা গভর্নর ছিলেন সারোজিনী নাইডু, যিনি উত্তর প্রদেশের গভর্নর হয়েছিলেন। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন হারিলাল জে. কানিয়া।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন জে. বি. কৃপলানি।
স্বাধীনতার সময় ভারতে ইস্পাত ও তুলা শিল্পের মতো কিছু সুসংগঠিত শিল্প বিদ্যমান ছিল। তবে শিল্পে মূলধন বিনিয়োগের অভাব ছিল, যা শিল্পোন্নয়নের প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। স্বাধীনতার পর কৃষি খাতের জিডিপিতে অবদান উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলেও, কর্মসংস্থানে এর নির্ভরশীলতা ততটা কমেনি।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, স্বাধীনতার আগে ১৯৩৪ সালে গঠিত হয়েছিল। এই ব্যাংক গঠনের সুপারিশ করেছিল হিল্টন-ইয়াং কমিশন।
এই প্রশ্নগুলির মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন দিক, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, ঐতিহাসিক ঘটনা, এবং স্বাধীনতার পরবর্তী ভারতের প্রাথমিক প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি চিত্র দেখতে পাই। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের এক একটি অংশকে তুলে ধরে।
Education is a right — ensure no student is left behind. We aim to make quality education accessible to all. To make exam preparation accessible, affordable, and empowering for every learner, join the noble cause — Share Your Knowledge.